রাঙ্গামাটিঃ-বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বুলেট নয়, হানাহানি নয় ভালোবাসা দিয়েই পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ফিরিয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে একটি সময় বছরে বরাদ্ধ ছিলো ১০০ কোটি টাকা যা বর্তমানে শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সকল মন্ত্রনালয় যোগ করলে পার্বত্য অঞ্চলে বছওে ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের মুলক শর্ত হচ্ছে শান্তি। পার্বত্য অঞ্চলে যদি আমরা শান্তির সুবাতাস বয়ে নিতে পারি তাহলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারী) বিকেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাডভেঞ্চার উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা (এনডিসি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্মানিত সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, ইন্ডিয়া ন্যাশনাল এ্যাডভেঞ্জার ক্লাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট রান এস ভ্রিমা, বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপদেষ্টা লেঃ জেনারেল (অবঃ) এটিএম জহিরুল আলম, আরসিডিএস, পিএসসি, ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড, রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইনুর রহমান, এসইউপি, এডব্লিউসি, পিএসসি।
পার্বত্য মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের সুনাম কুড়িয়ে এনেছে। নেপাল ভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ইসিমোড পুরস্কার অর্জণ করে পার্বত্য অঞ্চলের সম্মান বিশ্বের কাছে সমাদৃত করেছে। তিনি বলেন, এই অর্জন শুধু উন্নয়ন বোর্ডের নয়, এই অর্জন পুরো বাংলাদেশের। এই অর্জনের জন্য পুরো কৃতিত্ব হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা সহ বোর্ডের সকল কর্মকর্তার।
ওসিয়ান সেলর এন্ড অ্যাডভেঞ্চারের প্রতিনিধি মিস এ্যানি কোয়েমেরি, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে বর্তমান সরকার বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীর জন্য মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই দুটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সহ সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
জাতির পিতার কথা স্মরণ করে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকী আরো স্মরনীয় করে রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড যে আয়োজন করেছে তা শুধু পার্বত্য অঞ্চল নয় দেশে ও বিদেশের তরুন সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে। পাশাপাশি জাতির জনককে স্মরণের মাধ্যমে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরো অনুপ্রানীত হবে এই অঞ্চলের মানুষ।
পরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাডভেঞ্চার উৎসবে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী দেশ বিদেশের মোট ১০০জন অ্যাডভেঞ্চারীকে পুরস্কার প্রদানসহ বাংলাদেশের প্রথম এ্যাভারেষ্ট জয়ী পর্বতারোহী নিশাতকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, উৎসবে পার্বত্য এলাকা থেকে ৩১ জন, দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে ৫৩ জন এবং ১৬ জন বিদেশী অংশগ্রহনকারী রয়েছে। আর ২৭জন মহিলা অ্যাডভেঞ্চারে অংশগ্রহন করছে। আর বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার ইভেন্ট পরিচালনার জন্য ১৬ জন বিদেশী প্রশিক্ষক উৎসবে যোগ দিয়েছেন। এছাড়া ভারত, নেপাল ও অস্টেলিয়া থেকে ১৬ জন অতিথি উৎসবে যোগ দিয়েছেন।