বান্দরবানের হতদরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ সদস্য মেহেদি হাসান দোলন

373

বান্দরবানঃ-বান্দরবান পুলিশের এক সদস্য মেহেদি হাসান দোলন শীতে যখন সারাদেশ কাঁপছে ঠিক সেই সময়ে মানবতার হাত বাড়িয়ে বান্দরবানের হতদরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
পুলিশের চাকুরীর কাজ শেষে অবসর পেলেই তিনি ছুটে যান মানবতার কল্যাণে কাজ করতে, আর তারই ধারাবাহিকতায় কয়েকদিনের প্রচন্ড ঠান্ডায় যখন দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিরা শীতে কষ্ট ভোগ করছে তখন নিজ বেতনের জমানো অর্থ দিয়ে সড়কের ধারে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দুস্থদের কম্বল ও আর সোয়েটার, চাঁদর হাতে তুলে দেন পুলিশের এই গর্বিত সদস্য।
মেহেদি হাসান দোলন জানান, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দিই। যোগদানের পর ট্রেনিং শেষ করে প্রথম পোস্টিং নিয়ে চলে আসি বান্দরবান পুুলিশ লাইন রির্জাভ অফিসে। পুলিশে চাকুরী পাওয়ার পর দেশসেবা ও মানব সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলেছি। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবার জন্য সবসময় কিছু করার চিন্তা নিয়ে এগুতো থাকি। এর আগে ও আমি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে নিজ উদ্যোগে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ প্রদান, নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিস প্রদানসহ বই খাতা বিতরণ করেছি। অসহায় মহিলাদের দিয়েছি সেলাই মেশিন, যাতে সেলাই করে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। বান্দরবানের এক ভিক্ষুককে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে নিজ পাঁয়ে দাড়ানোর জন্য তৈরি করে দিই ভ্রামাম্যন একটি দোকান এবং কিনে দিই বেশ কিছু মালামাল। শুধু এসব কাজই নয় শীতে কষ্ট পাওয়া গরীব ও অসহায় ব্যক্তিদের শীত নিবারণের জন্য রাতের আধাঁরে অলিতে-গলিতে ঘুরে ঘুরে বিতরণ করে আসছি শীতবস্ত্র। মেহেদি হাসান দোলন জানান,আমি কিছুই চাই না, শুধু নিজের সামান্য অর্থ দিয়ে আগামীতে গরীব ও দু:খীদের সেবা করে যেতে চাই।
এদিকে পুলিশ সদস্যর এই মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়েছে অনেকেই, আর তার জন্য শুভ কামনা করেছে উপকারভোগীরাই। ভ্রামাম্যন দোকান পাওয়া বান্দরবান সদরের লাঙ্গি পাড়ার বাসিন্দা মো: হোসেন জানান, এই পুলিশ সদস্য মেহেদি হাসান দোলন ভাইয়ের জন্য আমি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দোকান করে আয় উপার্জন করছি, বর্তমানে আমার পরিবার ভালোই চলছে। এক সময় ভিক্ষা করে অনাহারে দিন কাটাতাম, আজ নিজের পায়ে দাঁড়ালাম শুধু দোলন ভাইয়ের জন্য।
বান্দরবান পুুলিশ লাইন রির্জাভ অফিসে কর্মরত পুলিশ সদস্য মো: রিয়াদ ও শাহাদাৎ হোসেন জানান, মেহেদি হাসান দোলন পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য, তার কর্মকান্ডে আমরা উজ্বিবিত হয়। তিনি প্রায় সময়ই বেতনের জমানো অর্থ দিয়ে সেবামূলক কাজ করে যায়, আর তার এসব কাজ দেখে আমরা উৎসাহ পায়।
এদিকে পুলিশে চাকুরী করে বেতনের জমানো অর্থ দিয়ে মানবতার জন্য কাজ করে যাওয়া দোলনের এই সামাজিক কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। পুলিশ সুপার জানান, মেহেদি হাসান দোলন ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেই। যোগদানের পর ট্রেনিং শেষ করে প্রথম পোস্টিং নিয়ে চলে আসে বান্দরবান পুুলিশ লাইনে রির্জাভ অফিসে। এই সদস্য চাকুরীর পাশাপাশি মানব সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। দোলন আমাদের পুলিশের গর্ব, আমরা চাই পুলিশের সকল সদস্য মানব কল্যাণে কাজ করে যাক।