হঠাৎ বৃষ্টিতে তিন পার্বত্য জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত, বাড়ছে প্রচন্ড শীতে তীব্র

347

রাঙ্গামাটিঃ-প্রচন্ড শীত মৌসুসে গতকাল ভোর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিতে রাঙ্গামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঠান্ডা হাওয়ার কারণে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গতকাল শুক্রবার থাকায় রাঙ্গামাটিতে আসা পর্যটকরাও পড়েছে বিপাকে। দিন ভর ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিলো পুরো রাঙ্গামাটি শহর। সূর্য্যরে দেখা মেলেনি সারাদিন।
ঘন কুয়াশা ও বৃস্টির ফলে রাঙ্গামাটিতে কষ্ট বেড়েছে বয়স্ক ও শিশুদের। সারাদিন লেপ মুড়ি দিয়ে বাসায় বসে থাকতে হয় বয়স্কদের। আর শিশুদেরকে কোন ভাবেই ঘরের বাইরে রাখা যায়নি। এমতাবস্থায় রাঙ্গামাটি শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
প্রচন্ড এই ঠান্ডার দিনে রাঙ্গামাটির জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তাদের সাধ্য মতো মানুষের কাছে শীত বস্ত্র তুলে দিচ্ছেন।
এদিকে আমাদের খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, এমনিতেই পাহাড়ি এলাকায় শীতের মাত্রা সমতলের চেয়ে বেশি। এর মাঝে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে খাগড়াছড়িতে। এতে করে জনজীবন যেন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে পার্বত্য এ এলাকায়।
পৌষের এ বৃষ্টিতে শীত ও কুয়াশা আরো বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুর নাগাদ সূর্যের মুখ কিছুটা দেখা দিলেও তাতে ছিল না তেমন তেজ। কুয়াশায় ঢাকা পড়ে আছে চারপাশ। কুয়াশার দাপটে যানবাহনগুলোকে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে।
শীতে বিপর্যস্ত হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু তা চহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
এদিকে শীত নামার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা। বাড়তি রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। তবে আতঙ্কিত না হয়ে শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে সর্তকতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বান্দরবানে অসময়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি,বেড়েছে শীত
বান্দরবানঃ-বান্দরবানে শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঘন্টাখানেক বৃষ্টি শেষে আবার কয়েক ঘন্টা বাদে শুরু হয় এই বৃষ্টি।
এদিকে হঠাৎ বৃষ্টিতে বেড়ে গেছে শীতের তীব্রতা। শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে জনজীবনে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। গেল কয়েকদিনের ঠান্ডা এই বৃষ্টির পরশে আরো বেড়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বান্দরবানের মধ্যমপাড়ার বাসিন্দা আবু মং মার্মা জানান, হঠাৎ বৃষ্টিতে আমাদের অনেক সমস্যা দেখা দেয়, সকাল থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টির কারণে আজ ঠান্ডার প্রকোপ পড়েছে বেশ।
বান্দরবানের বালাঘাটার মো: জসিম উদ্দিন জানান, শীতের দিনের এই বৃষ্টি আমাদের জন্য ঠান্ডা এনে দিলে ও নতুন সবজির ক্ষেতের জন্য বেশ ভালো হয়েছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আমাদের সবজির ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানির ছাহিদা মেটাবে।
এদিকে হঠাৎ বৃষ্টিতে দূভোর্গে পড়েছে খেটে খাওয়া জনসাধারণ, রাস্তাঘাট রয়েছে বেশিরভাগ ফাঁকা। জেলা সদরের ট্রাফিক মোড়, বাসষ্টেশন, মধ্যম পাড়া, উজানীপাড়া, নোয়াপাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে সড়কে দেখা যায়নি জনসাধারণের অবাধ বিচরণ।
হঠাৎ বৃষ্টির কারণে শিশু ও মায়েদের নিরাপদে বাসায় অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: প্রত্যুষ পল ত্রিপুরা বলেন, এমনিতে পার্বত্য এলাকায় প্রচুর শীত পড়ছে কয়েকদিন ধরে, তার উপরে যোগ হয়েছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। ডা: প্রত্যুষ পল ত্রিপুরা আরো বলেন, আমাদের এই সময়টা বিশেষ সর্তক থাকতে হবে, বেশি করে গরম কাপড় পড়তে হবে এবং শিশুদের প্রতি বেশ যত্নবান হতে হবে, আর কোন মারাত্মক কিছুর লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।