চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরে এসেছে – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

312

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল অশান্ত। আওয়ামীলীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর শান্তি চুক্তির মাধ্যমে আমরা অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করি। শান্তি চুক্তির কারনে খাগড়াছড়িতে সেখানকার প্রায় এক হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের আমরা পুনর্বাসন করেছি। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরে এসেছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ স্থাপন থেকে শুরু করে সেখানকার রাস্তাঘাট প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে। বিএনপির আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেখানে মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে এই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিনত হতো। স্বাধীনতার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্ত পরিবেশ ছিল, কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম আবারো অশান্ত হয়ে ওঠে।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে নির্মিত বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ গবেষণাতরী ‘সিভাসু রিসার্চ ভেসেল’ এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এসময় রাঙ্গামাটি সাংসদ দীপংকর তালুকদার এমপি, সাবেক মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ,রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবীর, রাঙ্গামাটি পৌরসভা মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরীসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কনফারেন্স হল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সোলার প্যানেল প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বলে গ্রিড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব ছিলনা। এ কারণে আমরা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলোকিত করার উদ্যোগ নিয়েছি। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের একটি ঘরও অন্ধকার থাকবে না। প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলবে। এভাবেই সবার কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ বাসন্তি চাকমা, চাকমা সার্কেল চীফ ব্যরিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়, উন্নয়নবোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পগুলোর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রতিনিধি, উপকারভোগীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি প্রকল্পসহ চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে তিনি এসব প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলো হল- চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে নির্মিত বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ গবেষণাতরী ‘সিভাসু রিসার্চ ভেসেল’ গবেষণা কেন্দ্র, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ‘ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার’, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের অধীনে প্রদত্ত সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন পাঁচটি জাহাজ।