ডেক্স রিপোর্ট,পাহাড়ের আলো ডট কম : আগষ্ট মাস জাতীয় শোকের মাস। এই মাসে আমরা হারিয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। হারিয়েছি তাঁর পরিবারের সবাইকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ছিল ভয়াবহ সেই কালো রাত। সেই শোকাবহ রাতের কথা জতি ভুলবেনা ভুলতে পারবেনা। স্বাধীন বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। স্বাধীন দেশের স্থপতি শেখ মুজিব আমাদের যে পতাকা দিয়ে গেছেন সেই পতাকা দেশের যে প্রান্তে উড়বে সেখানেই বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি পাওয়া যাবে।
তবে কাপ্তাই বাসীর কাছে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি একটু ভিন্ন মাত্রায় পাওয়া যায়। ঘাতকের নির্মম আঘাতে শহীদ হবার মাত্র ৬১ দিন আগে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বঙ্গবন্ধু কাপ্তাই এসেছিলেন। তিনি কাপ্তাইয়ে এক বিশাল জনসভায় ভাষন দিয়েছিলেন। কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালিন সভাপতি ও ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালিন চেয়ারম্যান কাজী নুরুল ইসলাম সেই জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। যারা সেই জনসভায় ছিলেন তারা কান পাতলে এখনো বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের সেই ভরাট আওয়াজ শুনতে পান।
মৃত্যুর ৬১ আগে বঙ্গবন্ধুর কাপ্তাই আগমন আমাদের কাছে একদিকে আনন্দের অন্যদিকে বেদনার। বঙ্গবন্ধুর কাপ্তাই আগমনের বিশেষ কোন স্মৃতিচিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে সেদিন তাঁর উদ্দেশ্যে যে মানপত্র পড়া হয়েছিল তার একটি কপি কাজী নুরুল ইসলামের মাধ্যেমে আমাদের হস্তগত হয়েছে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ ভবনে (সেই সময় বলা হতো ওয়াপদা গেষ্ট হাউজ) কিছু সময় বিশ্রাম নিয়েছিলেন। সেখানকার পরিদর্শন বইয়ে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। আর পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যে পালঙ্কে বঙ্গবন্ধু শুয়ে ছিলেন সেটি এখনো আগেরমত আছে। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে পড়া মানপত্র, তাঁর স্বাক্ষর এবং সেই পালঙ্ক আমাদের স্মরন করিয়ে দেয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমানের কথা।
বঙ্গবন্ধু কাপ্তাই ভ্রমণের মাত্র ৬১ দিনের মাথায় নির্মমভাবে মৃত্যু বরণ করেন। এই কথা মনে করে এখনো অনেকে চোখের পানি ফেলেন। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন কাপ্তাইয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনেছিলেন মোঃ ইসমাইল, আবুল কাশেম এবং মোঃ হারুন।
তাঁরা বলেন মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভরাট কণ্ঠ এখনো কানে বাজে। আমরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিনা বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। তাঁরা বলেন এক অর্থে আমরা অনেক সৌভাগ্যবান। কেননা মৃত্যুর মাত্র দুই মাস আগে বঙ্গবন্ধু কাপ্তাই এসেছিলেন এবং তাঁর বক্তব্য শোনার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছিল। কানে বঙ্গবন্ধুর সুমধুর আওয়াজ নিয়েই তাঁরা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান।