পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বন্দোবস্তি কার্যক্রম শিথিল হচ্ছে

1064

ডেক্স রিপোর্ট, পাহাড়ের আলো ডট কম – পার্বত্য চট্টগ্রামে বাজার স্থাপনে ভূমি বন্দোবস্ত শিথিল করা হচ্ছে। গত বুধবার (১২জুন) দুপুরে ভূমি বন্দোবস্ত প্রদানের ক্ষেত্রে আরোপিত স্থগিতাদেশ শিথিলের বিষয়ে আন্তঃ মন্ত্রণালয়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি’র সভাপতিত্বে ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মেসবাহুল ইসলামের সঞ্চারনায় এতে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খগেশ্বর ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দু চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় স্থায়ী বাজার না থাকায় জনগণের ভোগান্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনার পর পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী বাজার বসানোর বিষয়ে বন্দোবস্ত দেয়ার ব্যাপারে সবাই একমত হন।

বৈঠকে যোগ দেয়া রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা জানিয়েছেন, ভূমি বন্দোবস্ত শিথিল করার বিষয়ে আলাপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাজার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে জেলা পরিষদ বাজার ফান্ডের মতো করে বন্দোবস্ত দিবে। কি কি শর্ত থাকবে বা কি প্রক্রিয়ায় হবে সেটি রেজুলেশন আসার পর এবং প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর পরিস্কার করে বলা যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বৈঠকে স্থানীয় বাজার স্থাপনের ক্ষেত্রে ভূমি বন্দোবস্ত অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগে ৮টি ক্ষেত্রে বন্দোস্ত দেয়া হতো, আজকের সিদ্ধান্ত আদেশ আকারে জারীর পর থেকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার স্থাপন ও বন্দোবস্তী জেলা পরিষদ করবে, তবে এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় তৎকালীন পার্বত্য উপমন্ত্রীর নির্দেশনায় পার্বত্য এলাকার বিরাজমান সমস্যা কারণে ভূমি বন্দোবস্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ ও ২০১৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কেইস টু কেইস ভিত্তিতে বিচার বিশ্লেষন করে ৮টি ক্ষেত্রে ভূমি বন্দোবস্ত শিথিল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

সে ক্ষেত্রে এখন বন্দোবস্ত দেয়া হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যথা মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, শশ্মান, কবরস্থান। বাণিজ্যিক কারণে বাজারফান্ডের জমি কেবলমাত্র স্বল্প মেয়াদী ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের কোন দপ্তরের জরুরী প্রয়োজনে, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ, প্রতি উপজেলা সদরে একটি), স্থানীয় পর্যটন, জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় মাষ্টার প্লানের ভিত্তিতে) এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্কাউটস ভবন নির্মাণ (সর্বোচ্চ ৫শতাংশ)। এবার নতুন করে বাজার স্থাপনে ভূমি বন্দোবস্তী শিথিলের বিষয়টি আদেশ জারি হলে ৯ নম্বরে যুক্ত হবে স্থানীয় বাজার স্থাপনে বন্দোবস্তী শিথিল করার বিষয়টি। তবে বাজার স্থাপানের বিষয়টি জেলা পরিষদের কাছে থাকছে। স্থানীয় জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে বাজার বসানো এবং জায়গার বন্দোবস্তী দেয়া হবে।

২০০১ সাল থেকে পাহাড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার বন্দোবস্তী বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বাড়ছে ভূমি বন্দোবস্তী পাওয়ার আবেদনের জট। অনেকে মনে করছে সীমিত আকারে হলেও যদি যাচাই বাছাই করে ভূমি বন্দোবস্তী চালুু করা যায় তা হলে পাহাড়ে ভূমি বিরোধ অনেকটা কমে আসবে।