মাটিরাঙ্গা ও পানছড়িতে গণহত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে পিবিসিপি’র শোকসভা ও দোয়া মাহফিল

619

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২৯ এপ্রিল ১৯৮৬ সালে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি উপজেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) অঙ্গ সংগঠন ও শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা কর্তৃক গণ হত্যার প্রতিবাদে পার্বত্য ‘বাঙালি ছাত্র পরিষদ’ (পিবিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে শোক সভা ও নিহতদের স্বরণে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মাটিরাঙ্গা গণহত্যা:
১৯৮৬ সালে ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সময়ে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং/ তবলছড়ি/ বর্ণাল/ বেলছড়ি/ আমতলি/ গুমতি/ মাটিরাঙ্গা/ গুইমারা ৮টি ইউনিয়নের ৮৫টি গ্রামের প্রত্যেকটি বাঙালির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এই গণহত্যা করে  শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা। এইদিন বাঙালিদের সমস্ত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং লুটপাট করা হয়। মাত্র কয়েক ঘন্টা সময়ে ৪০০ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা এবং আহত করা হয়েছে আরও ৮০০ জনের অধিক বাঙালিকে ।

পানছড়ি গণহত্যা:
১৯৮৬ সালে ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সময়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং/চেঙ্গী/পানছড়ি/লতিবান/উল্টাছড়ি ৫টি ইউনিয়নের ৪৫টি গ্রামের প্রত্যেকটি বাঙালি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এই গনহত্যা করে শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা। এইদিন বাঙালিদের সমস্ত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং লুটপাট করা হয়। এই সন্ত্রাসীরা সামনে বাঙ্গালী যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। মাত্র কয়েক ঘন্টা সময়ে ৩৫০ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ নিরীহ বাঙ্গালিকে হত্যা করা হয়েছে এবং আহত করা হয়েছে আরও ৫০০ জনের অধিক বাঙালিকে।

অনুষ্ঠানে পিবিসিপি’র রাঙ্গামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পিবিসিপি’র রাঙ্গামাটি জেলার শাখার সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

এতে বক্তারা বলেন, শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা সেদিন এতগুলো নিরহ অসহায় মানুষকে হত্যা করতে একটি বুলেটও ব্যবহার করেনি। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে জবাই করে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, অন্যান্য দেশি অস্ত্রের অাঘাতে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখা এবং বেঁচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আছে যাদের ঘটনার কথা মনে পড়লে তাদের গায়ের পশম খাড়া হয়ে যায়।

রাঙ্গামাটি জেলার সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মো:আল আমিন, রাঙামাটি সরকারী কলেজ সভাপতি ফয়েজ আহমেদ মোরশেদ, কলেজ সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, এটি আই সভাপতি মোঃ আবু নাঈম, পৌর সদস্য সচিব মোঃ জামিল হাসান সহ শতাধিক নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন পিবিসিপি’র রাঙ্গামাটি জেলার প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মোমিন। আলোচনার পর মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।