কাপ্তাই উপজেলা নির্বাচনঃ আওয়ামীলীগে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ -২জন, বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যানই একক প্রার্থী

309

কাপ্তাই প্রতিনিধি – আগামী ১৮ মার্চ কাপ্তাই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মফিজুল হক। মফিজুল হক দলীয় মনোনয়ন পেলেও তাঁর বিপক্ষে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হচ্ছেন কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব বিষয়ক সম্পাদক ও চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিপ্লব মারমা। এছাড়াও কাপ্তাই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ দিলদার হোসেন আবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মফিজুল হক বলেন, আমি পরপর দুইবার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রেখেছি। পাশাপাশি সামাজিকভাবেও সমগ্র কাপ্তাই উপজেলার জন্য কাজ করেছি। ভবিষ্যতে এলাকা ও এলাকাবাসীর উন্নয়নে আরো কাজ করতে পারবো এই বিশ্বাস থেকে দলীয়ভাবে আমাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমাকে এককভাবে মনোনয়ন দেওয়ায় কাপ্তাই উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া সত্বেও আওয়ামী লীগ থেকে আরেকজন প্রার্থী হচ্ছেন। এই বিষয়টি এলাকাবাসী ভালোভাবে নেয়নি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগ থেকে আরেক জন প্রার্থী হওয়াকে তিনি ভালো মনে করছেননা। নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে অন্য কেউ ভোটের ফলাফল নিয়ে নিতে পারে বলেও মফিজুল হক আশঙ্কা করেন।

এ ব্যাপারে কথা হয় বিপ্লব মারমার সাথে। তিনি নিজেকে কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব বিষয়ক সম্পাদক এবং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন বলে জানান। বিপ্লব মারমা বলেন ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে মফিজুল হক আমার সাথে (বিপ্লব মারমা) নির্বাচন করে হেরে যান। ২০১৪ সালে মফিজুল হক উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সেবার তিনি এককভাবে উপজেলা নির্বাচন করেও বিএনপির প্রার্থীর কাছে হেরে যান। পাশাপাশি ২০১৫ সালের ইউপি নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে থাকা অবস্থায় আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেওয়া হয় আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবীকে। ভবিষ্যতে আমাকে বড় পরিসরে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হবে দলীয় এমন সিদ্ধান্তকে তখন আমি মেনে নিয়ে নির্বচিন থেকে সরে দাঁড়াই। কিন্তু এবার যখন উপজেলা নির্বাচনের সময় আসলো তখন দলীয়ভাবে বারবার হেরে যাওয়া ব্যাক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সমগ্র উপজেলা বাসী দলীয় এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে। দলেদলে নারী পুরুষ আমার বাসায় এসে আমাকে কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবার অনুরোধ করেন। আমি কারো অনুরোধ ফেলতে পারিনি। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতেই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হবার জন্য ২৫০ জন ভোটারের স্বারক্ষর যুক্ত নাম ঠিকানা জমা দেবার নির্বাচনী বিধান রয়েছে। দলে দলে মানুষ এসে স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর দিয়ে যাচ্ছেন। ২৫০ জনের পরিবর্তে ৫শ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত নামের তালিকা জমা দিতে পারবেন বলেও বিপ্লব মারমা জানান।

মফিজুল হককে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় বিপ্লব মারমা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তাঁরতো (মফিজুল হক) ভয় পাবার কথা নয়। ভয়তো আমার (বিপ্লব মারমা) পাবার কথা। আমি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হচ্ছি। তবে আমি ভয় পাইনা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নির্বাচনে আমার জয় হবে।

কাপ্তাই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ দিলদার হোসেন বলেন, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেবার সময় আছে। আমি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ভোটের পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে সেটি বোঝার চেষ্টা করছি। ভোট যদি শতভাগ সুষ্ঠ হয় এমন নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে পুনরায় প্রার্থী হবার আশা রাখি। ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়েছিল। তাই সেবার আমি জিতেছিলাম। এবারও অনুরূপ ভোট হলে আমি আবারো জিত এই বশ্বাস আছে বলে দিলদার হোসেন জানান।