ঈদের তৃতীয় দিনে ভেসে উঠেছে রাঙামাটির সিম্বল অব আইকন

954

রাঙামাটি পর্যটন ঝুলন্ত ব্রিজকে বলা হয়ে থাকে, রাঙামাটির সিম্বল অব আইকন। ঈদের আগ থেকে এটির পাটাতন পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় ছিল। যার প্রভাব পড়ে রাঙামাটির পর্যটন খাতে। কিন্তু আজ শক্রবার ভোর থেকে ভেসে উঠেছে এই সিম্বল অব আইকন।

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে ঈদের তৃতীয় দিনে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত ছিল। ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন তেমন পর্যটক সমাগত না হলেও আজ শক্রবার পর্যটন স্পটগুলেতে পর্যটকের উপচে-পড়া ভিড় দেখা গেছে।

আজ বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন তেমন পর্যটক সমাগত না থাকলেও আজ পর্যটকের আনাগনা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। দুর-দূরান্তের পর্যটকের ভিড়ে স্থানীয়রাও ঘোরাঘুরি করদে দেখা গেছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং বেড়েছে। এতে করে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা হতাশামূলক অবস্থা থেকে হাসি মুখে থাকতে দেখা গেছে।

পর্যটন বোট মালিক সমিতির সদস্য আলাউদ্দিন জানান, ঈদকে ঘিরে আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতিও ছিলো সম্পূর্ণ কিন্তু ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ঝুলন্ত ব্রিজে পানি থাকার কারণে তেমন পর্যটক না আসলেও আজ থেকে পর্যটকের আনাঘোনা বেড়েছে। আজ আমরা পর্যটকের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা আশা করছি আগামীকাল থেকে আরো অধিক হারে রাঙামাটি পর্যটক আসবে।

ঢাকা সাভার থেকে রাঙামাটিতে ঘুরতে আসা অনুপম চৌধরী বলেন, আমি এর আগেও রাঙামাটি বেড়াতে এসেছি। ভ্রমণ পিপসু হিসেবে এবারো এসেছি। এখানে আসলে কেনো জানি মনটা ভালো হয়ে যায়। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগের রাঙামাটি যেমনটি ছিল, এখনও তেমনই আছে। কোন প্রকার নতুন রুপে কোন কিছু আবির্ভাব হয়নি। এভেবে দুঃখ লাগে।

ফরিদপুর থেকে আসা রিনা আক্তার জানান, আজ সকালে পুরো ফ্যামেলী নিয়ে আমরা রাঙামাটি এসেছি। এসে কাপ্তাই লেকে ঘুরে বেড়িয়েছি। সকালে এসেই সুভলং ঝংণায় গেলাম। সারাদিন ঘুরলাম এখন বিকালে পর্যটন হোটেল অবস্তান নিবো আমরা আরো কয়েকদিন রাঙামাটির প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য থাকবো।

রাজশাহী থেকে আসা জাফর ইকবাল বলেন, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ-পাহাড় মনোমুগ্ধকর। এখানকার পাহাড়ি পরিবেশ অনেক ভাল লাগে। তাই প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে আসা। আমি এর আগের অনেক বার এসেছি, বেশ ভালো কাটছে সময় আমাদের।

রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতর সদস্য ও হোটেল মতি মহলের সত্ত্বাধিকারী শফিউল আজম বলেন, ঈদের দু-একদিন আমাদের হোটেলের রুমগুলো আশানুরূপ বুকিং হলেও আজ থেকে কিছুটা বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আজ থেকে হঠাৎ বুকিং বেড়ে যাচ্ছে। ঝুলন্ত ব্রিজ পানিতে তলিয়ে যাওয়াতে পর্য়টকের তেমন আনাগোনা ছিল না। কিন্তু এখন পানি কমে যাওয়াতে পর্যটকের আনাগোন বেড়েছি। আজ থেকে আমরা রাঙাটিতে আশানুরূপ পর্যটক পাবো বলে আশা করি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখানকার পর্যটন শিল্প আগে যেমন ছিলো এখনো তেমনই আছে? বিগতদিনে নতুন কোন পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হয়নি। তাই একই জায়গায় বার বার মানুষ আসতে চাই না। বিকল্প কিছু একটা ভাবার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স’র ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, আমাদের আগে থেকেই কিছু রুম বুকিং ছিল। সবমিলে ৫০% রুম বুকিং ছিল। ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও পর্যটকরা রাঙামাটি অবস্থান নেননি। শুভলং ঝরণায় পানি থাকাতে অনেকেই সকালে এসে ঘুরাঘুরি করে বিকেলে চলে যায়। কারণ- ঝুলন্ত ব্রিজে পানি উঠে গিয়েছিল কিন্তু এখন ব্রিজে পানি নেই। তাই আমাদের হোটেলে বুকিং বেড়েছে। বর্তমানে আমাদের এখানে ৯০% বুকিং হয়েছে। আজ পর্যটক আসা শুরু করেছে । তার সাথে আমাদের টিকেট কাটার পরিমাণও বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা মনে করি। দুর-দুরান্তের পর্যটকের সাথে স্থানীয় পর্যটক আসা যাওয়া করছে বলে জানান তিনি।

পর্যটন বোট ঘাটের ম্যানেজার রমজান আলী জানান, এই দুদিন ব্রিজে পানি থাকায় তেমন বোট ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। আজ শক্রবার সকাল থেকে ৩০-৪০টি ট্যুরিস্ট বোট শুভলংসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো ছাড়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।